গণ ডিপোর্টেশনের আগ্রাসী পদক্ষেপে ট্রাম্প প্রশাসন
বাংলা পত্রিকা

*শিশুদের সুরক্ষা প্রত্যাহার
*বিচারকদের বরখাস্ত
*ইমিগ্রেশন কোর্ট চত্বরে অভিবাসী ধরপাকড়
যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের আরো কঠোর পদক্ষেপে দেশের অভিবাসন ব্যবস্থা অনেকটাই বিপর্যস্ত। একদিকে নির্যাতন বা অবহেলার শিকার শিশুদের বিতাড়ন সুরক্ষা বাতিল, অন্যদিকে একাসাথে ১৭ জন ইমিগ্রেশন বিচারককে বরখাস্ত ও শুনানীতে যাওয়া অভিবাসন প্রত্যাশীদের ইমিগ্রেশন কোর্টের ভিতর থেকে গ্রেফতারে গণ ডিপোর্টেশনের রূপ ট্রাম্প প্রশাসনের আগ্রসী পদক্ষেপে দিন দিন স্পষ্ট হচ্ছে। এমনকি জন্মসূত্রে নাগরিকত্বসহ বেশ কিছু বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আদেশে ফেডারেল বিচারকদের রায় সীমিত করা হয়েছে। এতে অভিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক আতংক দেখা দিয়েছে।
এই তিনটি ঘটনাই আমেরিকায় ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন বিরোধী নীতির বর্তমান রূঢ় বাস্তবতাকে সামনে নিয়ে এসেছে, যেখানে শিশু থেকে শুরু করে বিচারক পর্যন্ত কেউই রেহাই পাচ্ছেন না। বিচার বিভাগ ও প্রশাসন যেনো মুখোমুখি অবস্থানে। সম্প্রতি সিএনএন, এপি ও নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠেছে।
গণমাধ্যমের তথ্যমতে নিউইয়র্কের ফেডারেল কোর্টে দায়ের করা একটি মামলায় বলা হয়েছে, বহু নির্যাতিত ও অবহেলিত শিশুকে যে ‘স্পেশাল ইমিগ্রান্ট জুভেনাইল স্ট্যাটাস’ (ঝওঔঝ) দেওয়া হয়েছিল। ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিমালায় পরিবর্তনের ফলে সেটির অধীনে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা শিশুদের সেই সুরক্ষা থাকছে না। এখন এসব শিশু যুক্তরাষ্ট্রে অপেক্ষা করতে পারলেও তারা কর্মসংস্থানের অনুমতি পাচ্ছে না। যেকোন সময় তাদেরকে বিতাড়নের আওতায় আনা হবে। আর এর প্রভাবে প্রায় দেড় লাখ শিশুর ভবিষ্যৎ এখন ঝুঁকির মুখে। এই শিশুদের অনেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পালিয়ে এসেছিল পারিবারিক নির্যাতন থেকে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে দশটি অঙ্গরাজ্যের ইমিগ্রেশন আদালত থেকে ১৭ জন বিচারককে একসাথে বরখাস্ত করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তে বিস্মিত বিচারক সংগঠনগুলো বলছে, কোনো কারণ না দেখিয়েই এত বিচারককে ছাঁটাই করার ঘটনা নজিরবিহীন। বিচারকদের সংগঠনের দাবি, আদালতগুলো ইতোমধ্যে ৩.৫ মিলিয়ন মামলার বিশাল জট সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। এই মুহূর্তে বরং নতুন বিচারক নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন ছিল, বরখাস্ত নয়। ইলিনয়ের সিনেটর ডিক ডারবিন জানিয়েছেন, শিকাগো আদালতের এক বিচারক যিনি তাকে আদালত পরিদর্শনের সময় তথ্য দিয়েছেন, তাকেও বরখাস্ত করা হয়েছে এটি স্পষ্টভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার।
বিশেষ করে যখন অভিবাসন আদালতের পেন্ডিং কেস ৩৫ লাখ ছাড়িয়ে গেছে এবং একেকটি মামলার শুনানির জন্য এক বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে তখন এই ছাঁটাই বিচার ব্যবস্থাকে আরও সংকটে ফেলবে বলে মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।
আর তৃতীয় ঘটনায়, অভিবাসী অধিকার রক্ষা সংগঠনগুলো ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছে, যেখানে অভিযোগ উঠেছে আইনি শুনানির জন্য যেসব অভিবাসী আদালতে হাজির হন, তাঁদেরই আদালত প্রাঙ্গণ থেকে গ্রেপ্তার করছে আইস এজেন্টরা। এর ফলে অনেকে ভয় পেয়ে আদালতেই যাচ্ছেন না, যা ন্যায়বিচারের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে। মামলা অনুযায়ী, অনেক সময় বিচারক মামলাটি “পরিবর্তিত পরিস্থিতির” অজুহাতে বাতিল করে দেন, আর সঙ্গে সঙ্গেই বাইরের করিডরে দাঁড়িয়ে থাকা আইস কর্মকর্তারা সেই অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যান।
মামলার বাদীপক্ষ বলছে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই নতুন কৌশল পুরো বিচারব্যবস্থাকে ভয় দেখানোর অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। অভিবাসন আদালত যে এখন আর নিরাপদ জায়গা নয়, সেটিই যেন স্পষ্ট করে দিচ্ছে প্রতিটি নতুন পদক্ষেপ।
আন্তর্জাতিক এর আরো খবর

ঘানায় হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রতিরক্ষামন্ত্রীসহ ৮ জন নিহত

স্পেনের হুমিয়ায় ঈদ উদযাপন নিষিদ্ধ: ইসলামবিদ্বেষী সিদ্ধান্তে উত্তাল মুসলিম সম্প্রদায়

উত্তেজনার মধ্যেই রাশিয়া সফরে যেতে পারেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত

পলাতকরা ষড়যন্ত্র করছে, গণতন্ত্র রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান : মুশফিকুল ফজল

ট্রাম্পের আমলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেকর্ড সংখ্যক ভারতীয় ফেরত, সাত মাসেই ১,৭০০ ছাড়াল
