ঈদেও থেমে নাই ইসরাইলি বর্বরতা
সদা নিরানন্দে গাজার ঈদ আনন্দ

"যেখানে মানুষ অধিকার হারা
যেখানে জীবন দুঃখে শোকে ভরা
সেখানে আকাশে ঈদের ঐ চাঁদ
মেঘেই ঢাকা যে চিরদিন"।
কবি মতিউর রহমান মল্লিকের 'ঈদের খুশি অপূর্ণ রয়ে যাবে ততোদিন' কবিতা থেকে
সারা বিশ্বের মুসলমানরা যখন ঈদুল আযহা উদযাপনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন গাজার মানুষ তাদের জীবন বাঁচানোর জন্য লড়াই করছে। বিশ্ব দেখছে নেতানিয়াহুর প্রশাসন আরেকটি শহরকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের গাজায় ঈদ নেই। ধ্বংসপ্রাপ্ত গাজার বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি, আশ্রয়কেন্দ্রের তাঁবু থেকে অশ্রু ঝরছে। ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি আক্রমণের ৬০০ দিন পেরিয়ে গেছে। ২৩ লক্ষ মানুষের এই শহরে মৃতের সংখ্যা ৫৫,০০০-এ পৌঁছেছে। বিশ্লেষকরা জিজ্ঞাসা করছেন ইসরায়েলের রক্তপাত কবে থামবে?।
মজলুম গাজা বাসির এর কাছে একটু রুটি পাওয়াই হল ঈদের আনন্দ। 'আমি আমার বাচ্চাদের ঈদের জন্য নতুন পোশাক এবং খেলনা কিনতাম। এটি বছরের সবচেয়ে আনন্দের সময় ছিল। এখন, তারা কেবল একটি রুটি চায়। "মিষ্টি নয়, খেলনা নয় - কেবল কিছু খাওয়ার জন্য," ৩৭ বছর বয়সী চার সন্তানের জনক হুসাম আবু আমের দ্য নিউ আরবকে এই আকুতি ব্যক্ত করেন
আল জাজিরার একজন বিশ্লেষক লিখেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সবচেয়ে অন্ধকার দিনগুলিতে নাৎসি নির্যাতনের ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে অ্যান ফ্রাঙ্ক এবং তার পরিবার আমস্টারডামের একটি গোপন কক্ষে লুকিয়ে ছিলেন। তার মরণোত্তর প্রকাশিত ডায়েরি বিশ্বকে সেই সময়ে ইহুদি পরিবারগুলির ভয় এবং ট্রমার এক ভুতুড়ে আভাস দিয়েছে। আজ, ফিলিস্তিনে একটি করুণভাবে পরিচিত গল্প ফুটে উঠছে। এখন, অ্যান ফ্রাঙ্কের মতো হাজার হাজার শিশু - ইসরায়েলি সরকারের অনাহার এবং অবিরাম বোমাবর্ষণের কারণে মৃত্যুর মুখোমুখি। তাদের লুকানোর কোনও জায়গা নেই; নির্বিচারে ইসরায়েলি আক্রমণে তাদের চারপাশের ভবনগুলি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর, দখলদার ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় বোমাবর্ষণ করে, গাজাকে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে। কেউ কেউ বিশ্লেষণ করেছেন যে, এত দিন লড়াই করার পরেও কেন ইসরায়েল গাজা জয় করতে পারেনি। তারা জিজ্ঞাসা করছেন যে, এত দিন ধরে গাজায় নির্বিচারে বিমান ও স্থল আক্রমণ চালিয়েও ইসরায়েল কেন সফল হতে পারেনি?
তাদের মতে, নেতানিয়াহুর 'নাৎসি-মত' ইহুদিবাদী সরকার যুদ্ধের জন্য যে, তিনটি প্রধান লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল তার কোনওটিই এখনও অর্জিত হয়নি। এর কারণ হল ফিলিস্তিনিদের অদম্য মনোবল এবং প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের অদম্য সংগ্রাম।
এদিকে, খবর এসেছে যে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে (UNSC) উত্থাপিত একটি প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যেই প্রস্তাবে গাজায় অবিলম্বে, নিঃশর্ত এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়েছে।
বুধবার (৪ জুন) নিরাপত্তা পরিষদে অনুষ্ঠিত ভোটে, যুক্তরাষ্ট্রই একমাত্র দেশ যারা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেয়। নিরাপত্তা পরিষদের অন্য ১৪ সদস্য প্রস্তাবটিকে সমর্থন করে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ গাজা সম্পর্কিত ১৪টি প্রস্তাবের উপর ভোট দিয়েছে। এর মধ্যে ৪টি প্রস্তাব পাস হয়েছে। ২০২৪ সালের নভেম্বরের পর বুধবারের ভোট ছিল প্রথম।
আন্তর্জাতিক এর আরো খবর

জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের টানা ৫ বছরের বিশেষ অতিথি মোদীকে দাওয়াতই দেয়া হয়নি এবার

ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল ‘বার্সেলোনা’

নাইজেরিয়ায় আকস্মিক বন্যায় ১৫০ প্রাণহানি, নিখোঁজ অনেক,সর্বত্র ধ্বংসচিত্র

ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সরাসরি গুলি / গাজায় ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়েও ইসরায়েলি হামলায় নিহত ১০

স্ত্রীর হাতে মার খেলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রো! কি ঘটেছিল সেদিন?
