ইরানের পরমাণু স্থাপনা ধ্বংস করার ক্ষমতা নেই ইসরায়েলের

ইসরায়েলের সাম্প্রতিক অভূতপূর্ব আক্রমণের মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস করা। মার্কিন কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন যে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে করা এই আক্রমণে কমপক্ষে দুটি স্থাপনা আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন যে, ইসরায়েলের ইরানের গোপন এবং শক্তিশালী স্থাপনা ধ্বংস করার ক্ষমতা নেই।
ইরানের সবচেয়ে গোপন এবং নিরাপদ পারমাণবিক স্থাপনা হল ফোর্ডো, যা পাহাড়ের গভীরে নির্মিত। এই কেন্দ্রটিতে এমন প্রযুক্তি এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে যা এটিকে যেকোনো বহিরাগত আক্রমণ থেকে প্রায় অজেয় করে তোলে। সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের স্থাপনা ধ্বংস করার জন্য প্রয়োজনীয় বিশেষ ধরণের ভারী বোমা কেবল যুক্তরাষ্ট্রের কাছেই রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি একটি বিশেষ ৩০০ পাউন্ড বোমা, যা শক্ত পাথর এবং কংক্রিটের মধ্য দিয়ে বিস্ফোরিত হতে সক্ষম, একমাত্র এই কেন্দ্রটি ধ্বংস করতে পারে। তবে, ইসরায়েলের কাছে এই বোমা নেই এবং যুক্তরাষ্ট্র এটি সরবরাহ করতে ইচ্ছুক নয়।
প্রাক্তন মার্কিন জেনারেল জোসেফ ভোটেল বলেছেন, "আমরা চাই না যে, ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি বড় যুদ্ধ শুরু করার জন্য এই বোমা ব্যবহার করুক,"
এই সীমাবদ্ধতার কারণে, ইসরায়েল একটি বিকল্প পরিকল্পনা বিবেচনা করছে। নেতানিয়াহু সরকার ফোর্ডো পারমাণবিক স্থাপনা আক্রমণ করার কথা ভাবছে, বরং এর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র এবং যোগাযোগ অবকাঠামো আক্রমণ করে এর কার্যক্রম আংশিকভাবে পঙ্গু করে দেয়া যাবে।
ইসরায়েল এর আগে ১৯৮১ সালে ইরাকের ওসিরাক পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালিয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে, ইরান পাহাড়ের গভীরে ফোর্ডোর মতো স্থাপনা তৈরি করেছে যাতে বাইরের বিমান হামলায় এটি ধ্বংস না হয়।
আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (IAEA) জানিয়েছে যে, ফোর্ডো স্থাপনায় বর্তমানে ৮৩.৭% বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে, যা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ৯০% স্তরের খুব কাছাকাছি। বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন যে, ফোর্ডোতে একটি বড় সামরিক আক্রমণ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করবে এবং এর ফলে পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।
এখনও পর্যন্ত,প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলকে বিশেষ বোমা সরবরাহ করতে রাজি হননি। তার দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট: তিনি মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি যুদ্ধ চান না। তাছাড়া, তার অনেক সমর্থকও যুদ্ধবিরোধী।
ফোর্ডো এখন কেবল একটি প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ নয়, বরং একটি জটিল কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ। এটি ধ্বংস করার জন্য কেবল বোমা নয়, আন্তর্জাতিক ঐকমত্য এবং কৌশলগত রাজনীতিও প্রয়োজন, যা এখন নেতানিয়াহু সরকারের সামনে সবচেয়ে বড় বাধা।
আরও পড়ুন- পুলিশের হাতে মারণাস্ত্র থাকবে না, র্যাব পুনর্গঠন করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আন্তর্জাতিক এর আরো খবর

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ / আট হাজারেরও বেশি ইসরায়েলি বাসিন্দা গৃহহীন

নেতানিয়াহু হত্যা আর অপরাধে হিটলারকেও ছাড়িয়ে গেছেন: এরদোয়ান

টাইমস অফ ইসরাইলের প্রতিবেদন / ১০ দিনেই ফুরিয়ে যাবে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা শক্তি

জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে ইউক্রেনের সমর্থনে যৌথ বিবৃতির বিরোধিতা করে নাকচ করলো যুক্তরাষ্ট্র

পাকিস্তান সেনাপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাতের আগে ট্রাম্প-মোদির ফোনালাপ
.png)