জুলাই আন্দোলনে গুলি চালানো আ.লীগারের গলায় ফাঁসে কারাগারে ‘আত্মহত্যা’

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জ সাইদুর রহমান সুজন (৪৫) নামে এক বন্দী আত্মহত্যা করেছে বলে কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। সে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ছিল এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সহ বেশ কয়েকটি মামলার আসামি ছিল। কারা কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, রবিবার (১৫ জুন) সকালে কেরানীগঞ্জ কারাগারের সূর্যমুখী ভবনের একটি কক্ষে তিনি নিজের ব্যবহৃত গামছা দিয়ে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করে।
কারা সূত্রে জানা গেছে, সকাল ১১টার দিকে সূর্যমুখী ভবনে নিজের কক্ষে থাকা অবস্থায় জানালায় তোয়ালে দিয়ে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার সুযোগ নেয় সুজন। সেই সময় তার কক্ষে থাকা আরেক বন্দী ঘুমাচ্ছিলেন এবং আরেকজন আদালতে হাজিরা দিতে বেরিয়েছিলেন। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কারা হাসপাতালে এবং সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পৌঁছালে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মো. ফারুক বলেন, কারারক্ষীরা সুজনকে হাসপাতালে আনার সময় চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
কারা মহাপরিদর্শক সৈয়দ মোতাহের হোসেন এ বিষয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, সুজনের সাথে একই কক্ষে আরও দুই বন্দী ছিলেন। আজ সকালে সে নাস্তা করেছিল। তারপর একজন আদালতে যান, অন্যজন ঘুমাচ্ছিলেন। এর মধ্যেই সে আত্মহত্যা করে।
কারা সুপারিনটেনডেন্ট আরও বলেন, "তার বিরুদ্ধে মোট ১৫টি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন মামলাও রয়েছে। আমরা মনে করি হতাশা থেকে সে এটি করে থাকতে পারে। এটি অবশ্যই অনাকাঙ্ক্ষিত। বিষয়টি তদন্তের জন্য আমরা একটি কমিটি গঠন করেছি।"
কর্তৃপক্ষ বলছে যে, এটি নিছক আত্মহত্যা নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে তা তদন্তের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হবে। ঘটনাটি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে অবহিত করা হয়েছে।
সাইদুর রহমান সুজন ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বিরুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০ জানুয়ারী সন্ধ্যায় গোয়েন্দা পুলিশ তাকে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে রাতেই তাকে সাভার থানায় হস্তান্তর করা হয়। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সাভারে ছাত্র ও জনসাধারণের উপর গুলি চালানোর একাধিক ভিডিও ফুটেজে তাকে দেখা গেছে। এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে খুন ও অস্ত্র আইনে কমপক্ষে ১৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তার বিরুদ্ধে জমি দখলেরও অভিযোগ রয়েছে। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে স্থানীয়ভাবে চাঁদাবাজির অভিযোগে তাকে একবার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিয়া বলেন, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজন ছাত্র ও জনসাধারণের বিরুদ্ধে সরাসরি ভূমিকা পালন করেছিল। তার বিরুদ্ধে সাভার থানায় একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে।
আরও পড়তে- হিটু শেখের মৃত্যুদণ্ড, খালাস ৩: রায় মেনে নিতে পারছেন না আছিয়ার মা
বাংলাদেশ এর আরো খবর

চাঁদের মাটিতে পা রাখতে যাচ্ছেন প্রথম বাংলাদেশি তরুণী ঢাকার রুথবা ইয়াসমিন

নতুন বাংলাদেশের প্রত্যয়ে / জুলাইতে হবে জনাকাঙ্খিত ‘জুলাই সনদ’

ঢাকায় জাতিসংঘের ‘গুম’ বিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ

অর্থ আত্মসাৎ ও শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারি / ক্রিকেটার সাকিব সহ ১৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

পাচ্ছে 'দাঁড়িপাল্লা' প্রতীক / নিবন্ধন ফিরে পেলো বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
