ঢাকায় জাতিসংঘের ‘গুম’ বিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ

গুম (অন্তর্ধানের) মতো সংবেদনশীল মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে কাজ করে এমন জাতিসংঘের বিশেষ কমিটি ২০১৩ সাল থেকে বাংলাদেশ সফরের অনুমতি চেয়ে আসছে। কিন্তু বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও অনুমতি দেওয়া হয়নি। ২০২০ সালে সর্বশেষ অনুরোধটিও ব্যর্থ হয়েছিল। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় অবশেষে সেই দরজা খুলে গেছে।
বাংলাদেশে ‘গুম’-এর ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় যুক্ত হয়েছে। এক দশকের প্রচেষ্টার পর, জাতিসংঘের বলপূর্বক গুম বিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ (the UN Working Group on Enforced Disappearances-WGEID) প্রথমবারের মতো ঢাকায় পা রেখেছে। রবিবার দুই সদস্যের একটি কারিগরি প্রতিনিধিদল ঢাকায় পৌঁছেছে। চার দিনের এই সফরে তারা গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সাথে এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট স্তরের সাথে সরাসরি কথা বলবেন।
গুমের মতো সংবেদনশীল মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে কাজ করে এমন জাতিসংঘের বিশেষ কমিটি ২০১৩ সাল থেকে বাংলাদেশ সফরের অনুমতি চেয়ে আসছে। কিন্তু বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও অনুমতি দেওয়া হয়নি। ২০২০ সালে সর্বশেষ অনুরোধটিও ব্যর্থ হয়েছিল। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে অবশেষে সেই দরজা খুলে গেছে।
এই সফর তদন্তমূলক নয় - এটি তথ্য-ভিত্তিক পর্যালোচনা এবং পর্যবেক্ষণ। সফরকালে প্রতিনিধিদলটি আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, জাতীয় বলপূর্বক অন্তর্ধান কমিশনের সদস্য, পররাষ্ট্র দপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট ভুক্তভোগীদের পরিবারের সদস্যদের সাথে সরাসরি মতবিনিময় করবেন। এছাড়াও, নীতি নির্ধারণী আলোচনাও হবে।
প্রতিনিধিদলের দুই সদস্য হলেন WGEID-এর ভাইস চেয়ারপারসন গ্রাজিনা বারানোস্কা এবং সদস্য আনা লোরেনা ডেলগাডিলো পেরেজ। তাদের সফর ১৮ জুন শেষ হবে।
জাতিসংঘের এই দলটি প্রথমবারের মতো ২০১৩ সালের ১২ মার্চ বাংলাদেশ সফরের জন্য আবেদন করেছিল। এরপর ২০১৪, ২০১৬, ২০১৮ সালে - যদিও তারা বিভিন্ন সময়ে আবারও পরিদর্শনের আগ্রহ প্রকাশ করেছিল, তবুও বিষয়টি বারবার উপেক্ষা করা হয়েছে। বিশেষ করে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলির বলপূর্বক গুম সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বাংলাদেশের নাম আসার পর থেকে তাদের আগ্রহ বেড়েছে।
সম্প্রতি, বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনেও বাংলাদেশে গুম হওয়া নিখোঁজ গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের আর্তনাদ উঠেছে। তবে, অত্যাচারী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার সর্বদা বলে গেছে যে, 'নিখোঁজ' বলে দাবি করা অনেকেই নিজেরাই আত্মগোপনে চলে গেছেন, কেউ কেউ বিদেশে পালিয়ে গেছেন এবং কেউ কেউ জঙ্গিবাদে জড়িত ছিলেন। এসব ফালতু অভিযোগের মাধ্যমে জাতিসংঘের এই গুরুত্বপূর্ণ কমিটিকে বাংলাদেশের স্থান দেয়নি তৎকালীন অবৈধ ডাইনি হাসিনা সরকার।
এই বিতর্কের মাঝে, জাতিসংঘের গুম বিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্যদের সরাসরি পর্যবেক্ষণ বাস্তবতার অনেক দিক উন্মোচন করতে পারে। যদিও এই সফর কোনও তদন্ত নয়, এটি ভবিষ্যতে একটি বড় আন্তর্জাতিক তদন্ত উদ্যোগের সূচনা হতে পারে।
নিখোঁজদের পরিবারগুলি মনে করে যে, এটি একটি পর্যবেক্ষণ সফর হলেও, এটি বিশ্ব আদালতে তাদের আওয়াজ তোলার একটি দুর্দান্ত সুযোগ।
আরও পড়ুন- পুলিশের হাতে মারণাস্ত্র থাকবে না, র্যাব পুনর্গঠন করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বাংলাদেশ এর আরো খবর

চাঁদের মাটিতে পা রাখতে যাচ্ছেন প্রথম বাংলাদেশি তরুণী ঢাকার রুথবা ইয়াসমিন

নতুন বাংলাদেশের প্রত্যয়ে / জুলাইতে হবে জনাকাঙ্খিত ‘জুলাই সনদ’

অর্থ আত্মসাৎ ও শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারি / ক্রিকেটার সাকিব সহ ১৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

জুলাই আন্দোলনে গুলি চালানো আ.লীগারের গলায় ফাঁসে কারাগারে ‘আত্মহত্যা’

পাচ্ছে 'দাঁড়িপাল্লা' প্রতীক / নিবন্ধন ফিরে পেলো বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
