কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত পাকিস্তান তীব্র উত্তেজনার মধ্যে বিস্মারক মন্তব্য করে বসলেন ভারত কংগ্রেসের সভাপতি। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ১৩ দিন ধরে টানা উত্তেজনার পর, কংগ্রেস সভাপতি, প্রধান বিরোধী নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস করেছেন।

তিনি বলেছেন যে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জম্মু ও কাশ্মীরে হামলার কথা আগে থেকেই জানতেন। মল্লিকার্জুন খাড়গে মঙ্গলবার এমন বিস্ফোরক দাবি করেছেন।

টাইমস অফ ইন্ডিয়া, হিন্দুস্তান টাইমস অনুসারে খবর এই যে,  কংগ্রেস সভাপতি অভিযোগ করেছেন, 'গোয়েন্দা সংস্থাগুলি প্রধানমন্ত্রীকে তিন দিন আগে হামলার কথা জানিয়েছিল। একইভাবে, তিনি তার সফর বাতিল করেছেন। কিন্তু কেন্দ্র আক্রমণ প্রতিরোধে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি।' ।

খাড়গে আজ আরও বলেছেন, 'আমার কাছে তথ্য আছে যে, মোদীর সেই সময় কাশ্মীর সফরের কথা ছিল। কিন্তু সেই খবর পাওয়ার পর, তিনি সফর বাতিল করেছেন। আমি সংবাদমাধ্যম থেকে এটি সম্পর্কে জানতে পেরেছি।'

তিনি দাবি করেছেন, 'গোয়েন্দা সংস্থাগুলি সতর্ক করেছিল, কিন্তু এমন কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এটি কেন্দ্রের ব্যর্থতা। এখন তারা বলছে যে, তারা এই সবকিছু ঠিক করে দেবে।' কিন্তু আমাদের প্রশ্ন হলো, সবকিছু জানার পরও কেন কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি?

এদিকে, ১৯৭১ সালের পর ভারত জুড়ে এক বিশাল যুদ্ধ মহড়া শুরু হয়েছে। আজ থেকে রাজ্য থেকে রাজ্যে, শহর থেকে গ্রামে একযোগে এই মহড়া পরিচালিত হবে। এটি ৯ মে শেষ হবে। চার লক্ষেরও বেশি বেসামরিক প্রতিরক্ষা স্বেচ্ছাসেবক এতে অংশগ্রহণ করবেন। তাদের বেশিরভাগই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বেসামরিক প্রতিরক্ষা অধিদপ্তরের সাথে যুক্ত। সরকার সোমবার সকল রাজ্যে এই ‘মক ড্রিল’-এর নির্দেশ দিয়েছে।

কাশ্মীরের পাহালগাঁওয়ে হামলার কারণে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। মঙ্গলবার, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে যে, সোমবার টানা দ্বাদশ রাতে দুই দেশের সেনাবাহিনীর গুলিবর্ষণের কারণে নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।

সেদিন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকে যুদ্ধ পরিস্থিতির সমাধান নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল। যদিও ধারণা করা হয়েছিল পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে পারে, বাস্তবে তা হয়নি। বিপরীতে, দ্বিপাক্ষিক সংকট তীব্র হয়েছে। যুদ্ধের হুমকিও দেখা দিয়েছে।

এদিকে, জাতিসংঘে নিযুক্ত পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি অসীম ইফতিখার ভারতের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। সোমবার তিনি বলেছেন যে, ভারতের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড এই অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে কাশ্মীর সমস্যা সমাধান ছাড়া আঞ্চলিক শান্তি সম্ভব নয়।

এদিকে, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ সোমবার সতর্ক করে বলেছেন যে, ভারত যেকোনো সময় নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর আক্রমণ চালাতে পারে।

তিনি বলেছেন যে, ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পাহালগাঁওয়ে বন্দুকধারীদের হামলার পর দুই পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা উত্তেজনা বাড়ছে। তবে, পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল অসীম মুনির হুমকি দিয়েছেন যে, ভারত যদি পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করে তবে পূর্ণ শক্তি দিয়ে জবাব দেওয়া হবে।

আরও জানুন- ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ, পাকিস্তানের আকাশসীমায় ঢুকতে পারবে না ভারতীয় বিমান

তাড়াহুড়া করে দেশে ফিরলেন মোদি, এড়িয়ে গেলেন পাকিস্তানের আকাশপথ