৫ লক্ষ অভিবাসীকে বহিষ্কারে ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে সুপ্রিম কোর্টের রায়

সুপ্রিম কোর্ট একটি জরুরি আদেশ জারি করেছে যার মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনকে মানবিক প্যারোল কর্মসূচি বন্ধ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যা কিউবা, হাইতি, নিকারাগুয়া এবং ভেনেজুয়েলার প্রায় ৫ লক্ষ অভিবাসীকে সাময়িকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস এবং কাজ করার সুযোগ করে দেয়। বাইডেন প্রশাসনের সময় এই কর্মসূচি চালু করা হয়েছিল।
শুক্রবার রাতে সিএনএন জানিয়েছে, এই মাসে দ্বিতীয়বারের মতো সুপ্রিম কোর্ট ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতি বহাল রেখেছে। আদালত ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের জন্য আরেকটি অস্থায়ী কর্মসূচি বন্ধ করার পথও পরিষ্কার করেছে।
আদেশটি সংক্ষিপ্ত এবং স্বাক্ষরবিহীন ছিল। প্রথা অনুসারে, জরুরি ডকেট মামলার বিষয়ে আদালতের আদেশে কোনও যুক্তি বা ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। তবে, দুই উদারপন্থী বিচারপতি, সোনিয়া সোটোমায়র এবং কেতানজি ব্রাউন জ্যাকসন, সিদ্ধান্তের সাথে ভিন্নমত পোষণ করেছেন।
সিএনএন আরও জানিয়েছে যে, আদেশটি চূড়ান্ত নয়। মামলাটি এখনও নিম্ন আদালতে চলমান। কিন্তু এই আদেশ প্রায় ৫,৩০,০০০ অভিবাসীর দ্রুত নির্বাসনের পথ প্রশস্ত করে।
ভিন্নমত পোষণকারী মতামত লেখার জন্য পরিচিত বিচারক জ্যাকসন এই রায় সম্পর্কে বলেন, "আদালতের বেশিরভাগ সদস্য ভুলভাবে রায় দিয়েছেন।" তাঁর মতে, এই আদেশ প্রায় অর্ধ মিলিয়ন অভিবাসীর জীবন ও জীবিকা হঠাৎ করে শেষ করে দেওয়ার গুরুতর পরিণতিগুলিকে অবমূল্যায়ন করেছে।
জ্যাকসন বলেন, "আদালত এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, সরকারের পক্ষে ভারসাম্য থাকা উচিত, অর্থাৎ জনস্বার্থে, এই অভিবাসীদের মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই তাদের জীবন ধ্বংস করে দেওয়া উচিত।"
জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অধ্যাপক এবং সিএনএন বিশ্লেষক স্টিভ ভ্লাদেক বলেছেন যে, এই রায় ট্রাম্প প্রশাসনকে ওই চারটি দেশ থেকে আরও অনেক অভিবাসীকে নির্বাসিত করার সুযোগ দিয়েছে। কিন্তু অনেকেই তাদের দেশে ফিরে যেতে রাজি হবেন না।
বাস্তবতা হলো ঐতিহাসিকভাবে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আইজেনহাওয়ার প্রশাসনের সময় থেকে এই মার্কিন প্যারোল প্রোগ্রামটি কার্যকর ছিল। সেই সময়ে, হাঙ্গেরি থেকে পালিয়ে আসা হাজার হাজার মানুষকে যুক্তরাষ্ট্রে অস্থায়ী আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল। প্যারোলে মুক্তিপ্রাপ্ত অভিবাসীদের সাধারণত দুই বছরের জন্য কাজ এবং বসবাসের অনুমতি দেওয়া হয়, তবে এই মর্যাদা অস্থায়ী।
২০২৩ সালে, বাইডেন প্রশাসন কিউবা, হাইতি, নিকারাগুয়া এবং ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের কিছু শর্তে এই কর্মসূচির অধীনে আবেদন করার অনুমতি দেয়। আবেদনকারীদের একজন মার্কিন পৃষ্ঠপোষকতায় থাকতে হত এবং একটি নিরাপত্তা ছাড়পত্র পাস করাতে হত।
ট্রাম্প একতরফাভাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এই কর্মসূচি বাতিলের নির্দেশ দেন। যদিও হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি আইন অনুসারে এই কর্মসূচি পুনরায় শুরু বা বন্ধ করার ব্যাপক ক্ষমতা রাখেন, তবুও এই সিদ্ধান্ত সম্মিলিতভাবে নেওয়া যেতে পারে নাকি কেস-বাই-কেস ভিত্তিতে নেওয়া যেতে পারে তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
বিশ্লেষকরা বিশ্বাস করেন যে, এই রায় অভিবাসন বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের আরেকটি চরম পদক্ষেপকে সমর্থন করে, যা মার্কিন অভিবাসন নীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
আরও পড়ুন- অভিবাসী তাড়াতে নতুন কৌশলে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
আমেরিকা এর আরো খবর

মাস্ক-ট্রাম্প দ্বন্দ্ব: সংকটের মুখে নাসা

বিল গেটসের ২০০ বিলিয়ন ডলারের বেশিরভাগই আফ্রিকায় দান করবেন

সকল প্রক্রিয়া থাকবে সহজ / ট্রাম্পের ক্রোধে পড়া ক্ষতিগ্রস্ত বিদেশি শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় সুযোগ দিতে চায় চীন- জাপান ও মালোয়েশিয়া

বিশ্বে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ একমাত্র দেশ

নিরাপত্তা পরিষদে ব্যাপক ছাঁটাই, কাঠামোগত পরিবর্তন
